বেহেশতের অফুরন্ত নেয়ামত
ও সুখ শান্তি আল্লাহর অসীম রহমতের নিদর্শন। হাদীস শরীফে উল্লেখিত আছে, আল্লাহর যাবতীয় রহমতকে একশত ভাগে ভাগ করে তার
একমাত্র দুনিয়ার যাবতীয় জিন, ইনসান, দৈত্য দানব, পশু পাখি, কীটপতঙ্গ প্রভৃতি সকলের উপর বর্ষণ
করা হয়েছে, অবশিষ্ট 99 ভাগ শুধু
বেহেশতবাসীগনের সুখ শান্তি ও আরামের জন্য নির্ধারিত করে রাখা হয়েছে।
পরম করুণাময় আল্লাহ পাক কুরআন মজীদের মুমিনদের বেহেশতের সুসংবাদ
দেওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন,
“যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কাজ করেছে, আল্লাহ
পাক তাদেরকে এইরূপ বেহেশতে স্থান দান করবেন যাহার নিম্নভাগ দিয়া নহরসমূহ প্রবাহিত
হয়। বেহেশতীগন স্বর্ণ রৌপ্যের
কাঁকন পরিধান করবে,
তাদের পোশাক হবে সবুজ
বর্ণের রেশমি বস্ত্রের এবং তারা পিয়ালার পর পেয়ালা পবিত্র শরবত পান করবে”।
হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমরা
দুনিয়ায় পুরুষগণ রেশমি বস্ত্র পরিধান করো না। যে সকল পুরুষ দুনিয়ায় রেশমি বস্ত্র পরিধান করবে
ও স্বর্ণের অলংকার ব্যবহার করবে, তারা বেহেশতের বস্ত্রালঙ্কার হতে বঞ্চিত হইবে।
হুজুর (সাঃ)- এর হাদিসের
ব্যাখ্যাকারগণ বলিয়াছেন- বেহেশতের বস্ত্রালংকার হতে বঞ্চিত হওয়ার অর্থ এই যে,
তারা বেহেস্তই লাভ করতে পারবে না।
যে ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করবে, সে সর্বদা সন্তুষ্ট থাকবে, কেননা
বেহেশতে কোনরূপ দুঃখ কষ্ট, চিন্তা -ভাবনা, রোগ- সুক, মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা নাই। তার
পোশাক কখনো ছিন্ন বা ময়লা হবে না, তার যৌবন কখনো ক্ষুণ্ণ হবে না, তার পায়খানা-প্রস্রাবের কোন প্রয়োজন হবে না, তার শরীর কখনো নাপাক হবে না এবং
তাকে কোন পরিশ্রমের কাজ করতে হবে না ।
সম্পদ সম্বন্ধে আল্লাহ কোরআন মজীদে বলেছেন--
ان الذين سبقت لهم منا الحسنى اولئك عنها مبعدون لا يسمعون حسيسها وهم فيما اشتهت انفسهم خالدون لا يحزنهم الفزع الاكبر وتتلقاهم الملائكه هذا يومكم الذي كنتم توعدون
অর্থাৎ-- যাদের
জন্য আমার নিকট হতে নির্ধারিত ছিল, তারা দোযখের শাস্তি হতে দূরে থাকবে। যারা
দোযখের আযাবে গ্রেফতার থাকবে, তাদের ক্রন্দন ও চিৎকার ইহারা শুনতে পাবে না। তাদের মন যা চাইবে
বেহেশতের মধ্য তারা তাই পাবে। তাদের
সুখ চিরস্থায়ী হবে। কোনরূপ ভয় বা আতঙ্ক তাদেরকে
স্পর্শ করবে না। আল্লাহর ফেরেশতাগণ এসে তাদের সাথে সাক্ষাত করে বলবেন-- আল্লাহ
তোমাদের নিকট যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাই ইহা। বেহেস্তবাসীগন হাশর ময়দান হতে
পরম আনন্দের সহিত বেহেশতে প্রবেশ করবে এবং বেহেশতের নিয়ামত দেখে তারা বিস্মিত
আত্মহারা হয়ে পড়বে যে তাদের অন্য কোন কথাই স্মরণ হবে না।